ঠাকুরগাঁও হাসপাতালের ছাদে ঔষধি বাগান

ঠাকুরগাঁও হাসপাতালের ছাদে ঔষধি বাগান

জসীমউদ্দীন ইতি ঠাকুরগাঁও:

ভেষজ বাগানে উদ্বুদ্ধ করতে ও প্রাকৃতিক চিকিৎসা ব্যবস্থাকে জনপ্রিয় করতে
ঠাকুরগাঁও ২৫০শয্যা জেনারেল হাসপাতালের ছাদে গড়ে উঠেছে দুর্লভ প্রজাতির
ঔষধি গাছের বাগান। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও গাছ থেকে পাওয়া প্রাকৃতিক
ওষুধ দিয়ে রোগ নিরাময় বাড়াতে বাগানটি প্রদর্শনীয় হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে
বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে এই প্রাকৃতিক চিকিৎসা পদ্ধতিকে
আধুনিকায়নের জন্য গবেষণার পাশাপাশি ভেষজ পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন
বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন এলোপ্যাথিক ওষুধের
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ফলে বিকল্প হিসেবে ভেষজ ওষুধের উপর নির্ভরশীল
মানুষের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের পুরাতন বিল্ডিংয়ের দ্বিতল ভবনের পাশে
ছাদের টবে বেড়ে ওঠা গাছের সারি সমারোহ ছড়িয়েছে সবুজে। রয়েছে ভেষজ বাগানের
সাইনবোর্ড। প্রথম দেখায় খানিকটা সময় যে কারো চোখ আটকে যাবে উদ্যানে। এ
উদ্যানে আছে প্রায় ৪০ প্রজাতির ভেষজ গাছ। এ সবের মধ্যে রয়েছে-বিলুপ্ত ও
দুর্লভ প্রজাতি  অনন্তমূল, নয়নতারা, ঘৃতকাঞ্চন, অপরাজিতা, হাড়জোড়া,
বিশল্যকরনীসহ প্রায় অর্ধশতাধিক ঔষধি বৃক্ষ।
বাগান দেখতে আসা কয়েকজন জানান, এ বাগানে কয়েকটি দুষ্প্রাপ্য গাছ রয়েছে।
যা এখন সচরাচর দেখা মিলেনা, হারিয়ে যাচ্ছে ক্রমেই। বাগানটি হাসপাতালে আসা
রোগীদের মানসিক প্রশান্তি দেবে। তবে আরও বড় পরিসরে হলে দৃর্ষ্টিনন্দন
হতো। এদিকে ভেজষ চিকিৎসা নির্ভরশীলতা বেড়েছে হাসপাতালে আসা রোগীদের মাঝে।
ভেষজ বাগান পরিচালক ও হাসপাতালের একমাভেত্র আর্য়ুবেদিক মেডিকেল অফিসার
ডা. গুরুপদ সাহা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসপাতালের ছাদে বাগান
করার যে নির্দেশনা দিয়েছেন, তা বাস্তবায়নে এ উদ্যোগ নেয়া হয়। এখনও
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে প্রাচীনতম চিকিৎসাসেবা হোমিওপ্যাথি, ইউনানি,
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার গুরুত্ব রয়েছে। এ ছাড়াও আয়ুর্বেদিক পদ্ধতিতে
গাছপালার রয়েছে নানা ব্যবহার। সেই লক্ষ্যে এই বাগান গড়ে তোলা হয়েছে।
প্রাচীন এই চিকিৎসা পদ্ধতিগুলোতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কোনও সমস্যা হয় না।
তাই  অনেক মানুষ দিন দিন আয়ুর্বেদিক  চিকিৎসায় ঝুঁকছেন। প্রতিদিন
হাসপাতালের বর্হিবিভাগে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা নিচ্ছে গড়ে ৫০ থেকে ৬০জন রোগী
আসেন বলে জানান তিনি।
প্রকৃতিবিদ ও বিশিষ্ট কয়েকজন শিক্ষাবিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ভেষজ
উদ্ভিদের রয়েছে অসাধারণ ঔষধি গুণাগুণ। যা আমাদের পরিবেশ রক্ষা ও
রোগবালাইয়ের প্রতিকার হিসেবে কাজ করে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নানা ঔষধি গাছ
সংরক্ষণ করছে অত্যন্ত যত্নসহকারে। এ উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। তবে
প্রাকৃতিক চিকিৎসা ব্যবস্থা জনপ্রিয় করতে হলে ভেষজ বাগান আরও বেশি করে
গড়ে তুলতে হবে বলে মতদেন তারা।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন